Responsive Ad Slot

Weather - Tutiempo.net
Editor Choice লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Editor Choice লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ঝালকাঠি-২ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো, তবুও স্থবির জেলা বিএনপি!

কোন মন্তব্য নেই

সোমবার, নভেম্বর ০৩, ২০২৫


ঝালকাঠি প্রতিনিধি: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-২ (সদর–নলছিটি) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সহসভাপতি ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো। দলের নিবেদিতপ্রাণ এই নেত্রী দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।

তবে মনোনয়ন ঘোষণার পরও ঝালকাঠি জেলা বিএনপির অফিসে ছিল না কোনো আনুষ্ঠানিক আনন্দ বা উচ্ছ্বাসের পরিবেশ। স্থানীয় সূত্র জানায়, বিগত দিনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সমন্বয়ের অভাবের কারণে জেলা বিএনপির মধ্যে সাময়িক নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে।

এ বিষয়ে দলের একাধিক ত্যাগী নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ইলেন ভুট্টো দলের নিবেদিতপ্রাণ নেত্রী। কিন্তু জেলা পর্যায়ে বিভাজন ও নেতৃত্ব সংকটের কারণে কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের অভাব দেখা দিয়েছে। এখন সময় এসেছে ব্যক্তিগত মতভেদ ভুলে দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।”

জেলা যুবদলের সদস্য সচিব বলেন, “দীর্ঘদিন জনগণের পাশে থাকা একজন যোগ্য নেত্রীকে মনোনয়ন দিয়েছে দল। আমি মনে করি, দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত সঠিক। এই আসনটি রক্ষা করতে হলে ইলেন ভুট্টোর মতো নেত্রীরই প্রয়োজন। ইনশাআল্লাহ, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে এই আসনটি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উপহার দেব।”

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন বলেন, “আমি বিএনপি করি, আমি সংগঠনের দায়িত্বে আছি—আমার কাজ হচ্ছে দলকে সুসংগঠিত করা। ইলেন ভুট্টো জনপ্রিয় নেত্রী, সাধারণ মানুষের মাঝে তার অবস্থান রয়েছে বলেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে তাকে প্রার্থী করা হয়েছে। প্রার্থী যেই হোক না কেন, দলের স্বার্থে আমরা সবাই তার সঙ্গে কাজ করব।”

‘আন্তর্জাতিক তৃতীয় পিঠস্থান’ শিববাড়িতে শিব চতুর্দশীর মেলা শুরু

কোন মন্তব্য নেই

রবিবার, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৩


খাইরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ‘আন্তর্জাতিক তৃতীয় পিঠস্থান’ ঝালকাঠির শিববাড়িতে চলছে ঐতিহ্যবাহী শিব চতুর্দশীর মেলা।

সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের শিববাড়ি গ্রামে শনিবার শুরু হওয়া তিন দিনের এ মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থী অংশ নিচ্ছেন।

মেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অসীম কুমার সাহা বলেন, “হিন্দুদের আন্তর্জাতিক এই তৃতীয় পিঠস্থানে প্রতি বছর শিব চতুর্দশী উপলক্ষে মেলা বসে। মেলার প্রধান পর্ব দেবতা শিবের উপাসনা।

 “এক সময় নেপাল-ভারত ও শ্রীলঙ্কা থেকেও পুণ্যার্থী আসত। তখন মাসব্যাপী মেলা জমত। লাখ লাখ মানুষের সমাগম হত। এখন আর আগের দিনের মতো নেই। পরিসর অনেক কমে গেছে। তবে এ বছর ৫০ হাজারের মতো পুণ্যার্থী ও দর্শনার্থীর সমাগম হয়েছে বলে ধারণা করছি।”

মেলায় গ্রামীণ সংস্কৃতির সবকিছু পাওয়া যাচ্ছে। দোকানে দোকানে মিষ্টি, পান-সুপারি পাওয়া যাচ্ছে। মেয়েদের প্রসাধনীর পসরা সাজিয়ে বসেছে অনেকে। নাগরদোলা আর শিশুদের খেলনা তো আছেই।

মেলায় আসা অনেকেই বিশেষ উদ্দেশ্যে শিবের পূজা করছেন। নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায়, কুমারীরা আকাক্সিক্ষত বর প্রত্যাশায় ফুল-জলসহ নানা মাঙ্গলিক উপাদানে নৈবেদ্য সাজিয়ে দেবতা শিবকে সন্তুষ্ট করছেন। অপরদিকে শিশুর মঙ্গলের জন্য মায়েরা এসেছেন মানত নিয়ে।

ঢাকার উত্তরা থেকে সপরিবার এসেছেন সঞ্জিত কুমার হালদার। মেয়ে, স্ত্রী ও শিশুছেলের সঙ্গে এনেছেন প্রতিবেশীদেরও।

তার মেয়ে সম্মান প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অধিলক্ষী হালদার বলেন, “ছোটবেলা থেকে পিসি, বড় বোনসহ আত্মীয়-স্বজনকে এই উৎসব উদযাপন করতে দেখে আসছি। আমি আজ সকাল থেকে উপবাস করছি, শিবের ব্রত পালন শেষে উপবাস ভাঙব।” যোগ্য বর প্রত্যাশায় শিব ঠাকুরকে নৈবেদ্য দিতেই এত দূর এসেছেন বলে জানান অধিলক্ষী।

“ছেলের জন্য শিববাড়িতে মানত ছিল। তাই এ উৎসবে ওর চুল কেটে ন্যাড়া করে মানতি পালন করলাম।” বলছেন ফরিদপুর থেকে শিশুছেলেকে নিয়ে আসা ইন্ধুশ্রী সাহা। সাথে আছেন তার আত্মীয়-স্বজনও।

কেউ কেউ এসেছেন নিছক মেলা উপভোগের জন্য। স্বরুপকাঠি থেকে আসা এমন একদল তরুণের সাথে কথা হল। তাদের একজন মো: কাইউম, “অনেক দিন ধরে প্রতিবেশীদের কাছে এ মেলার কথা শুনে আসছি। এত বড় আর এমন উৎসবমুখর মেলা আমি আর কোনো দিন দেখিনি।”

মেলা ভাঙবে সোমবার সন্ধায়।

আলিম ফলাফলে দেশসেরা ঝালকাঠির এনএস কামিল মাদরাসা

কোন মন্তব্য নেই

বুধবার, ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৩


ঝালকাঠি:
আলিম পরীক্ষার ফলাফলে দেশ সেরা হবার গৌরব অর্জন করেছে ঝালকাঠি ঐতিহ্যবাহী এন এস কামিল মাদরাসা (নেছারাবাদ মাদরাসা) বিগত বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারও ধরে রেখেছে মাদরাসার শিক্ষার্থীরা আলিম পরীক্ষায় বিজ্ঞান সাধারণ বিভাগে ৩৭৪ ছাত্র অংশ নেন যাদের মধ্যে ২৫৬ জন জিপিএ-, ১১৬ জন জিপিএ এবং বাকীরা সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন

মতানৈক্যসহ ঐক্য নীতির প্রবর্তক যুগশ্রেষ্ঠ দার্শনিক হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. ১৯৫৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি স্থাপিত করেন। সময়ের ব্যবধানে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার ছাত্রের পদচারণায় মুখরিত এ মাদরাসাটি অনার্স- মাস্টার্সসহ জেডিসি, দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল পরীক্ষার (হাদিস, তাফসির ও ফিকহ) ফলাফলে শীর্ষস্থান অর্জনকারী দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানের এ সাফল্যের জন্য অধ্যক্ষ মাওলানা গাজী মুহাম্মদ শহিদুল ইসলাম আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে সাফল্যের কারণ বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, দলীয় রাজনীতিমুক্ত শিক্ষাঙ্গন, সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের মানোন্নয়নে প্রয়োজনীয় ক্লাসটেস্ট ও সুন্দর হাতের লেখা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে প্রতিনিয়ত মনিটরিং করা হয়। সময়োপযোগী ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগুলোতে এ প্রতিষ্ঠান বরাবরই গৌরবোজ্জ্বল ফলাফল লাভ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসায় পাশের হার শতভাগ। দারুন্নাজাত সিদ্দিকিয়া কামিল মাদরাসায় পাশের হার ৯৯.৯০ শতাংশ, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা ঢাকা শাখায় পাশের হার ৯৯.০৭ শতাংশ ও টঙ্গি শাখায় পাশের হার ৯৯.৮০ শতাংশ। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদরাসা দেশসেরা।

প্রথমবারের মতো ঝালকাঠিতে নারী ডিসি

কোন মন্তব্য নেই

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২২


সারা দেশের ২৩ জেলায় একযোগে নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ঝালকাঠিতে নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ফারাহ গুল নিঝুমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৩ নভেম্বর) রাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেন উপসচিব ভাস্কর দেবনাথ বাপ্পী।

অন্যদিকে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক জোহর আলীকে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য করা হয়েছে।

ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যার ১৭ বছর আজ

কোন মন্তব্য নেই

সোমবার, নভেম্বর ১৪, ২০২২

ঝালকাঠিতে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ সোমবার দুই বিচারক হত্যা দিবস পালন করা হয়েছে ২০০৫ সালের এদিনে জঙ্গিরা আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে ঝালকাঠির সিনিয়র সহকারী জজ সোহেল আহম্মেদ জগন্নাথ পাঁড়েকে হত্যা করে

দিবসটি উপলক্ষে সকালে নানা কর্মসূচি পালন করেন ঝালকাঠির বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সকাল সাড়ে আটটায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে এক শোক ্যালি বের হয় পরে শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকায় নিহত বিচারকদের স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানানো হয়

বিস্তারিত আসছে...

ইকোপার্ক রক্ষায় মামলা, ডিসি-মেয়রসহ ১৬ জন বিবাদী

কোন মন্তব্য নেই

বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ১০, ২০২২

খাইরুল ইসলাম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান, বাসন্ডা ও ধানসিঁড়িসহ পাঁচ নদীর মোহনায় প্রস্তাবিত ইকোপার্ক রক্ষায় জনস্বার্থে মামলা করা হয়েছে। ঝালকাঠির প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি করে ঝালকাঠির ইকোপার্ক রক্ষা, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন কমিটি।


কমিটির পক্ষে মামলায় বাদী হয়েছেন সদস্য সচিব এবং সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মহিন উদ্দিন তালুকদার, যুগ্ম-আহ্বায়ক আকতার হোসেন, শোয়েবুর মোর্শেদ সোহেল ও গিয়াস উদ্দিন খসরু।

বুধবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির মামলাটি আমলে নিয়ে আগামী ২৮ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।

মামলায় জেলা প্রশাসক (ডিসি), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), সহকারী কমিশনার (ভূমি), তহশলিদারসহ (পৌরভূমি অফিস) ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০০৪ সালে একনেক সভায় ইকোপার্কটি অনুমোদন পায়। ৮৮.৩৬ একর জমির ওপর গড়ে ওঠে ইকোপার্ক। সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান, বাসন্ডা ও ধানসিঁড়ি নদীর মোহনায় প্রাকৃতিকভাবে জেগে ওঠা এই চরটি এলাকাবাসীর পিকনিক স্পট, ঈদ আনন্দ মেলা, তাবলিগ জামাতের এজতেমা, বৈকালীন ভ্রমণ, বৈশাখী মেলা, ঘোড় দৌড়সহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

কবি জীবনানন্দ দাশের স্মৃতিবিজড়িত ধানসিঁড়ি নদীর প্রবেশমুখে ৮৮.৩৬ একর জমিতে গড়ে ওঠা ইকোপার্কটি রক্ষা করা এবং রাষ্ট্রের ও জনগণের সম্পত্তি হিসেবে ব্যবহার ঝালকাঠিবাসীর প্রাণের দাবি। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে ইকোপার্কের উন্নয়নে একনেকে চার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয় এবং ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নিচু জমি ভরাট করে সমতল করা হয়। উপকূলীয় বনায়ন প্রকল্প কর্তৃক ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে বৃক্ষরোপণ করা হয়।

জেলা প্রশাসন কর্তৃক ঘোষিত ইকোপার্কটি ঝালকাঠি যুগ্ম প্রথম জেলা জজ আদালতকে ব্যবহার করে প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা বেদখল করার পায়তারা চালাচ্ছেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী সাকিনা আলম লিজা মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সকালে মামলাটি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে আগামী ২৮ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন।


আড়াই লাখ টাকার চুক্তিতে জাতীয়পার্টি নেতাকে হ*ত্যা*র পরিকল্পনা!

কোন মন্তব্য নেই

বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ১৩, ২০২২


পূর্ব বিরোধের জেরে দুই বছর আগে আড়াই লাখ টাকায় জাতীয় পার্টির নেতা শফিকুল ইসলামকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয় বিভিন্ন সময় বিকাশের মাধ্যমে চুক্তির টাকা পরিশোধও করা হয় সে পরিকল্পনা অনুযায়ী শফিকুলের ওপর হামলা চালানো হয় শফিকুলের পা বিচ্ছিন্ন হলেও ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান

হামলার মূল আসামী ইয়াসিনকে ঢাকা লালবাগ থানাধীন বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর পিরোজপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে মঠবাড়িয়া থানা চত্বরে প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের চাঞ্চল্যকর ঘটনার তথ্য জানান।

গ্রেফতারকৃত মূল হামলাকারী ইয়াসিন উপজেলার তুষাখালী গ্রামের মো. হাফেজ খানের ছেলে। আহত শফিকুল ইসলাম একই গ্রামের আইয়ূব আলী শিকদারের ছেলে ও তুষখালী ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক।

এ সময় পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃত মূল আসামী ইয়াসিন এর তথ্যমতে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের বহেরাতলা এলাকার জনৈক জলীল জমাদ্দারের বাড়ির পাশের খাল থেকে হামলায় ব্যবহৃত দুটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।

ইয়াসিনের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, শফিকুলকে হত্যার পরিকল্পনা অনুযায়ী ইয়াসিনসহ তার ৫ সহযোগীদের নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার উপজেলা ঝাউতলার একটি বাসায় একত্রিত হয়। ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার বাজার থেকে ৯শ টাকায় ৩টি ধারাল ‘দা’ ক্রয় করে। ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে হত্যার পরিকল্পনাকারী তুষখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ভাই তুষখালী বাজারের মুদি দোকানি নাসির হোসেন জাতীয় পার্টি নেতা শফিকুল ইসলামের অবস্থান ও তথ্য ওত পেতে থাকা ইয়াসিনকে মোবাইলের মাধ্যমে অবহিত করে।

স্থানীয় বাসিন্দা মুসা শরীফের সঙ্গে চলমান একটি মামলায় শফিকুল আদালতে হাজিরা দিতে সকালে মোটরসাইকেলযোগে তুষখালী থেকে মঠবাড়িয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। মাঝের পুলের সন্নিকটে ফরাজি বাড়ির সামনে কালভার্টের উপরে আসা মাত্রই একটি মহেন্দ্র গাড়ি শফিকুলের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। শফিকুল মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে পিছনের দিকে দৌড় দিলে হামলাকারীরা মাহেন্দ্র থেকে নেমে তাকে ধাওয়া করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাম পা বিচ্ছিন্ন করে।

এ সময় এলোধাবাড়ি কোপানোর কারণে শফিকুলের পেটের ভুড়ি বেড়িয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়। হামলাকারী ইয়াসিন ও তার সহযোগীরা ৪ কিলোমিটার দূরে বহেরাতলা এলাকার খালে ধারালো অস্ত্রগুলো ফেলে দিয়ে মাহেন্দ্রযোগে পালিয়ে যায়। মাহেন্দ্র চালককে ৫ হাজার ও অপর ৩ সহযোগীকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করে ইয়াসিন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, স্থানীয়রা গুরুতর আহত শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি হলে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

এ ঘটনায় ওই দিন বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান হাওলাদারের ভাই নাসির হাওলাদারকে আটক করে। পরে নাসিরসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আহত শফিকুলের মা মমতাজ বেগম মামলা করলে নাসির হাওলাদারকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৩০ সেপ্টেম্বর শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়।

১ অক্টোবর হামলায় ব্যবহৃত মাহেন্দ্র গাড়িটি পার্শ্ববর্তী ভাণ্ডারিয়া উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের শিংখালী গ্রাম থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তবে চালক পলাতক থাকায় এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। মূল পরিকল্পনাকারী চেয়ারম্যানের ভাই নাসির হাওলাদার ও মূল হামলাকারী ইয়াসিনের মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পিরোজপুর পুলিশ সুপার বলেন, তদন্তের স্বার্থে এই মুহূর্তে আর কিছু বলা সম্ভব নয়। ঘটনায় জড়িত ও পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মঠবাড়িয়া সার্কেল) মোহাম্মদ ইব্রাহীম, মঠবাড়িয়া থানার ওসি মুহা. নূরুল ইসলাম বাদল, ওসি ডিবি (পিরোজপুর দক্ষিণ বিভাগ) আসলাম উদ্দিন, মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ, ডিবি পরিদর্শক মাহফুজ এবং পরিদর্শক (অপারেশন) আব্দুর হালিম প্রমুখ।

সুত্র: বরিশালটাইমস

মণ্ডপে মণ্ডপে বিদায়ের বিষণ্ণ সুর, চলছে বিসর্জন

কোন মন্তব্য নেই

বুধবার, অক্টোবর ০৫, ২০২২


আজ বুধবার শুভ বিজয়া দশমী। বাংলাদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড়ো ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপুজোর পাঁচ দিনের অনুষ্ঠানমালা শেষ হল প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে এবার বিদায় নিয়েছেন দেবী দুর্গা।

বুধবার সন্ধ্যায় শুরু হয়েছে প্রতিমা নিরঞ্জন। দুর্গাপুজোর (#Durga_Puja) ষষ্ঠী থেকে নবমী অবধি ছিল জমকালো আলোকসজ্জা, ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি, ধূপ-ধুনোয় আরতি ও ভক্তদের পুজো-অর্চনা আর সকল ধর্মের মানুষের দর্শন। মহানবমী রাতেই ভক্তদের চোখে-মুখে ছিল দেবী বিদায়ের বিষণ্ণ সুর। অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সন্ধ্যায় জলাশয়ে বিসর্জন দিচ্ছেন প্রতিমা। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ আবদুল হামিদ আজ হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে সন্ধ্যায় শারদীয় দুর্গাপুজোর শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন জানান, শারদীয় অনুষ্ঠানটি বুধবার সন্ধ্যা ৮টায় সীমিত আকারে অনুষ্ঠিত হবে। মাস্ক পরে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানে যেতে অতিথিদের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।

এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (#Sheikh_Hasina) দেশবাসীর প্রতি ফের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কড়া বার্তা দেন। তিনি বলেন, “কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবেন না। পক্ষকাল বিদেশে সফর শেষে গতকালই মঙ্গলবার দেশে ফিরে বিকেলে ঢাকার গণভবন থেকে ভারচুয়ালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় একথা বলেন। তিনি বলেন, “সব ভেদাভেদ ভুলে বাঙালিরা সবসময় সব ধর্মের অনুষ্ঠান উৎসবে শামিল হয়। আমরা কিন্তু প্রতি উৎসবে ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই মিলে উৎসব উদযাপন করি। যে কারণে বলি, ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার।বাংলাদেশ সবসময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ।”

আজ বাংলাদেশের প্রতিটি মণ্ডপে সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটে দশমীবিহিত পুজো শেষে ভক্তরা অঞ্জলী প্রদান করেন। এরপর গৃহবধূরা সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। আজ রাজধানী ঢাকা-সহ সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে বিজয়ার শোভাযাত্রা সহকারে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে। সর্বত্র বিসর্জন শেষে ভক্তরা শান্তিজল গ্রহণ করবেন।

বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকার ঢাকেশ্বরী মন্দির মেলাঙ্গন থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হয় বিকেল ৪টে নাগাদ। এর আগে রাজধানীর ২৪১টি পুজোমণ্ডপের অধিকাংশই এসে সমবেত হয় পলাশীর মোড়ে। সেখান থেকে সম্মিলিত বাদ্যি-বাজনা, মন্ত্রোচ্চারণ ও পুজো-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় বিজয়ার শোভাযাত্রা। সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের বুড়িগঙ্গা নদীর জলে একে একে বিসর্জন দেওয়া হয় প্রতিমা। বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি। বেতার ও টেলিভিশনে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করা হয়। বঙ্গভবন-সহ গুরুত্বপূর্ণ ভবন আলোকসজ্জিত করা হয়।

মহানবমীর দিনও আগের দিনের মতো রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের পূজামণ্ডপগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছিল। হাজার হাজার ভক্ত, পূজারি ও দর্শনার্থী মণ্ডপগুলোতে ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দর্শন করেছেন। কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোথাও কোথাও মণ্ডপসংলগ্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয় বিকেল থেকেই। এই কারণে নগরের বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা অবধি বিদ্যুৎহীন ঢাকায় যানজট অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছে যাওয়ায় পুরোহিতদের ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়। রাজধানী ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী, রমনা, বনানী, শাঁখারীবাজার, তাঁতীবাজার, গোপীবাগের রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন মন্দিরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেনারেটর সচল রাখা হয়। ফলে বিদ্যুৎ না থাকলেও তেমন কোনও অসুবিধা হয়নি।

ঈদের নামাজ পড়বেন যেভাবে

কোন মন্তব্য নেই

বৃহস্পতিবার, জুলাই ০৭, ২০২২

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব। আত্মত্যাগের এই উৎসব ঈদের নামাজ ও কোরবানির মাধ্যমে পালিত হয়। ঈদুল আজহার দিনে ঈদের নামাজ পড়া ওয়াজিব। 

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতএব তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ (সুরা কাউসার, আয়াত: ২)

ঈদের নামাজের পদ্ধতি স্বাভাবিক নামাজের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন। অতিরিক্ত ৬ তাকবিরের মাধ্যমে ঈদের নামাজ জামাতে আদায় করতে হয়। ঈদের দুই রাকাত নামাজের মধ্যে আজান-একামত নেই। ফরজ নামাজের মতোই তাকবিরে তাহরিমা বলে হাত বাঁধতে হবে। তারপর সানা পড়ে অতিরিক্ত তিন তাকবির বলতে হবে। প্রথম দুই তাকবিরে হাত তুলে ছেড়ে দিতে হবে এবং তৃতীয় তাকবিরে হাত বেঁধে ফেলতে হবে। তারপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ পড়ার পর ইমামকে সুরা ফাতিহা পড়ে এর সঙ্গে অন্য একটি সুরা মেলাতে হবে। তারপর ফরজ নামাজের মতোই রুকু-সিজদা করে প্রথম রাকাত শেষ করতে হবে।

দ্বিতীয় রাকাতে ইমাম কেরাত পড়া শেষে রুকুতে যাওয়ার আগে অতিরিক্ত তিন তাকবির দিতে হবে। প্রতি তাকবিরের সঙ্গে হাত উঠাবে এবং ছেড়ে দেবে। তারপর চতুর্থ তাকবির বলে রুকুতে চলে যাবে। তারপর স্বাভাবিক নামাজের মতোই নামাজ শেষ করবে।

নামাজ শেষে ইমাম মিম্বারে উঠে দুটি খুতবা দেবেন। এ সময় ইমামের খুতবা মনোযোগ সহকারে শোনা এবং তা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। এ সময় কোনো ধরনের কথা বলা বা অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া নিষেধ। খুতবা শেষে সবাই ঈদগাহ ত্যাগ করবে।

মাওলানা ইসমাইল নাজিম, ইসলামবিষয়ক গবেষক

সিলেটে সেনাবাহিনী মোতায়েন

কোন মন্তব্য নেই

শুক্রবার, জুন ১৭, ২০২২

টানা ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের ফলে সিলেটের বেশ কিছু অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে। জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ির ভেতরে পানি প্রবেশ করেছে। পানির উচ্চতা ক্রমশ বাড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এমতাবস্থায় প্রশাসনের আহ্বানের প্রেক্ষিতে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হচ্ছে।

শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, অসামরিক প্রশাসনের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটে বন্যা নিয়ন্ত্রনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সিলেটে আবারও দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক উপচে তীব্র বেগে পানি ঢুকছে। উজানি ঢলে একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলা। গ্রাম ছেড়ে লোকজন আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছে। গবাদিপশুর জায়গা হয়েছে মহাসড়কে। বানভাসি মানুষের ভোগান্তি এখন চরমে।

এদিকে সারাদেশের সাথে সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলার। ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সন্ধ্যার পর থেকে জেলা সদরের প্রতিটি মহল্লা, অলিগলিতে পানি প্রবেশ করছে। প্রতিটি মহল্লার ঘরের ভেতরে হাটু পানি সড়কে কমর পানি। সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, তাহিরপুর, দোয়ারা বাজার, জামালগঞ্জ, দিরাই, শাল্লা, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ প্রতিটি উপজেলা পানিতে তলিয়ে তলিয়ে গেছে। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে জেলার সাথে। খেটে খাওয়া মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছে।

সুরমা নদীর পানি ৭৫ সেন্টিমিটারের উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বন্দী হয়ে পড়ায় জেলার প্রতিটি উপজেলা,ইউনিয়নে-ইউনিয়নে বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। জানা যায়, সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলায় খাদ্যসামগ্রী বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। জেলার নিম্নাঞ্চল এলাকায় সৃষ্ট বন্যা মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি ত্রাণসহায়তা পাঠাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক। সুনামগঞ্জ শহরের সাহেববাড়ি ঘাট, জগন্নাথবাড়ি এলাকা, উকিল পাড়া, রপিন নগর, জামতলা, তেঘরিয়া, বড়পাড়া, হাসননগর, নবীনগরসহ কয়েকটি এলাকার ঘর ও সড়কে পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মন্দির, মৎস্য খামার, গ্রামীণ রাস্তা-ঘাট ও হাট-বাজার। ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক লাখ মানুষ।


ফাতেমা (রা.)-কে নিয়ে নির্মিত সিনেমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, প্রদর্শনী বাতিল

কোন মন্তব্য নেই

বৃহস্পতিবার, জুন ০৯, ২০২২

কয়েকটি সিনেমা হলের বাইরে প্রচণ্ড বিক্ষোভের পর মুহাম্মদ (সা.)-এর কন্যা ফাতেমা (রা.)-কে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বাতিল করেছে ব্রিটিশ সিনেমা কোম্পানি সিনেওয়ার্ল্ড। কোম্পানিটি জানিয়েছে, কর্মী ও দর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এ সিদ্ধান্ত।

এক লাখ ২০ হাজারের বেশি লোকের গণস্বাক্ষর করা একটি পিটিশনে ব্রিটেনের সিনেমা হল থেকে ‘দ্য লেডি অব হ্যাভেন’ সিনেমাটি নামিয়ে ফেলার আবেদন জানানো হয়েছিল। খবর বিবিসির।

৩ জুন মুক্তির পর বার্মিংহাম, বোল্টনসহ কয়েকটি শহরে সিনেমাটির প্রদর্শন শুরুর পর সিনেমা হলের সামনে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু হয়।

বোল্টন কাউন্সিল অব মস্ক-এর চেয়ারম্যান আসিফ প্যাটেল জানিয়েছেন, ‘সিনেমাটি একটি সাম্প্রদায়িক মতাদর্শে দুষ্ট এবং ঐতিহাসিক বর্ণনাকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে ইসলামের ইতিহাসে সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তিদের অসম্মান করেছে।’

মুসলিম নিউজ সাইট ফাইভ পিলার টুইটারে একটি ছবি শেয়ার করে লিখেছে-২০০ জন মুসলমান রোববার সিনেওয়ার্ল্ডের বার্মিংহাম শাখার বাইরে ছবিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।

এদিকে, চলচ্চিত্রটির প্রযোজক মালিক শ্লিবাক বলেছেন, ব্রিটিশ জনসাধারণ কী দেখতে বা আলোচনা করতে পারে আর কী পারে না, তা কারোরই নির্দেশ দেওয়া উচিত নয়।

ফজলে এলাহীকে জামিন দেওয়া হয়েছে

কোন মন্তব্য নেই

বুধবার, জুন ০৮, ২০২২

রাঙামাটির স্থানীয় দৈনিক ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম পত্রিকা’ ও অনলাইন পোর্টাল ‘পাহাড় টোয়েন্টিফোর’ ডটকমের সম্পাদক ফজলে এলাহীকে জামিন দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার রাঙামাটির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাতেমা বেগম তাঁকে জামিন দেন। ফজলে এলাহীর জামিন পাওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর আইনজীবী মুক্তার আহমেদ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হিসেবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালি থানা–পুলিশ। জামিনের বিষয়ে আইনজীবী মুক্তার আহমেদ বলেন, ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে যে ধারায় মামলা হয়েছে তা জামিন পাওয়ার যোগ্য। জামিন আবেদন করার পর আজ আদালত তা মঞ্জুর করেন।

কোতোয়ালি থানা সূত্রে জানা গেছে, ফজলে এলাহীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলার বাদী রাঙামাটির সংরক্ষিত আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনুর মেয়ে নাজনীন আনোয়ার। মামলার নম্বর ৮১৭/২২। সংবাদ প্রকাশের জেরে এই মামলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ফজলে এলাহী দৈনিক কালের কণ্ঠ ও এনটিভির রাঙামাটি প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করেন। তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ফজলে এলাহীর বিষয়ে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আসার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার আদালতে তোলা হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সাতটায় রাঙামাটি শহরের এডিসি হিল এলাকার নিজ বাসা থেকে ফজলে এলাহীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁকে কোতোয়ালি থানায় নেওয়া হয়। ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তারের পর কোতোয়ালি থানায় সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ ভিড় করেন।

সাংবাদিক ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানায় রাঙামাটি সাংবাদিক সমিতি, রিপোর্টার ইউনিয়ন, ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন।

ফজলে এলাহীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আজ রাঙামাটিতে মানববন্ধনের ডাক দেয় রিপোর্টার ইউনিয়ন।

পুতিনের সঙ্গে কথা বলা মানে কুমিরের মুখে পা দেওয়া: বরিস জনসন

কোন মন্তব্য নেই

শুক্রবার, এপ্রিল ২২, ২০২২


ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, ইউক্রেন নিয়ে যেকোনো শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। তিনি বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলা মানে কুমিরের মুখে পা দেওয়া।

বরিস জনসন বলেন, পুতিনের সঙ্গে যেকোনো দেনদরবারে যাওয়া কুমিরের মুখে নিজের পা প্রবেশ করিয়ে দেওয়ার মতো। ইউক্রেনে পশ্চিমাদের অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা করা ছিল অত্যাবশ্যক।  

ভারত সফরে যাওয়ার আগে বরিস জনসন এসব কথা বলেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ভারত সফরে নরেন্দ্র মোদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে তাদের অবস্থান পাল্টানোর বিষয়ে উত্সাহিত করার কথা রয়েছে। এ সময় তিনি রাশিয়া-ভারত দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক ফাটল ধরার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন।

জনসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন পুতিনের ওপর বিশ্বাস রাখা কঠিন। এখন দেখার বিষয় ইউক্রেনীয়রা কীভাবে তাঁর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায়। ইউক্রেন নিয়ে পুতিনের কৌশল স্পষ্ট। পুতিন চেষ্টা করছেন, ইউক্রেনের যতটা সম্ভব দখল করা যায়। একই সঙ্গে নিজের শক্ত অবস্থান থেকে আলোচনাও চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।’

এর আগে আজ বৃহস্পতিবার সকালে গুজরাটের রাজধানী আহমেদাবাদে নামার মধ্য দিয়ে জনসন ভারত সফর শুরু করেন। বিমানবন্দর থেকে হোটেল পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘ পথে তাঁকে বিশাল অভ্যর্থনা জানানো হয়। জনসনকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল ও গভর্নর আচার্য দেবব্রত।

বরিস জনসনের গাড়িবহর বিমানবন্দর থেকে হোটেলে যাওয়ার পথে সড়কের দুই পাশে ঐতিহ্যবাহী গুজরাটি গান ও নৃত্য পরিবেশন করে অভ্যর্থনা জানানো হয়।

সূত্রের বরাতে এনডিটিভি জানিয়েছে, গুজরাটে এক দিনের সফরে রাজ্যের প্রখ্যাত ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করবেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী। পরে তিনি রাজ্যের পঞ্চমহল জেলার হালোল এলাকার কাছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি নির্মাণসামগ্রী উৎপাদন প্রতিষ্ঠান জেসিবির উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন করবেন।

দিনভর সংঘর্ষ, প্রাণ গেল পথচারীর

কোন মন্তব্য নেই

বুধবার, এপ্রিল ২০, ২০২২

ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে দোকান কর্মীদের সংঘর্ষে আহত ৪০। হামলার শিকার ১২ সাংবাদিক।

রাজধানীর ঈদের কেনাকাটার প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট এলাকায় গত সোমবার দিবাগত রাতের পর গতকাল মঙ্গলবারও দিনভর সংঘর্ষ হয়েছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিপণিবিতানের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের এই সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত নাহিদ হোসেন (২০) নামের এক পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।

সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়ে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর। খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলায় আহত হন অন্তত ১২ জন সাংবাদিক। হামলা থেকে রেহাই পায়নি অ্যাম্বুলেন্সও। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, আহত এক শিক্ষার্থীকে নিয়ে বেলা একটার দিকে অ্যাম্বুলেন্সটি কলেজের সামনে দিয়ে নীলক্ষেতের দিকে যাচ্ছিল। সেটিতে ভাঙচুর চালান দোকানমালিক, কর্মচারী ও হকাররা।

ঢাকায় সাম্প্রতিক কালে এ ধরনের সংঘর্ষ হয়নি। সংঘর্ষের কারণে গতকাল প্রায় পুরো দিন রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক মিরপুর রোডের সায়েন্স ল্যাব থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ ছিল। এর প্রভাবে আশপাশের সড়ক কার্যত অচল হয়ে পড়ে। নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকার বিপণিবিতানগুলো খোলা সম্ভব হয়নি। ব্যবসায়ীদের দাবি, এক দিনেই অন্তত ১০০ কোটি টাকার কেনাবেচা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন তাঁরা।

প্রথম দফায় গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষ হয়। দ্বিতীয় দফায় গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইফতারের পর দুই পক্ষই আবার রাস্তায় নামে। রাত সাড়ে ১০টার পর ছাত্ররা এবং দোকানমালিক ও কর্মীরা সড়ক থেকে সরে যান।

সংঘর্ষের মধ্যে গতকাল দুপুরে ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন এক বিজ্ঞপ্তিতে আগামী ৫ মে পর্যন্ত কলেজের ছাত্রাবাস বন্ধ ঘোষণা করেন এবং বিকেলের মধ্যেই ছাত্রাবাস খালি করার নির্দেশ দেন। তবে ছাত্ররা এ নির্দেশ মানেননি। তাঁরা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধও করেছিলেন।

শুরু যেভাবে

নিউমার্কেটের দোকানমালিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিপণিবিতানটির ৪ নম্বর ফটকে ওয়েলকাম ও ক্যাপিটাল নামে দুটি খাবারের (ফাস্ট ফুড) দোকান রয়েছে। সোমবার বিকেলে ইফতারি বিক্রির জন্য হাঁটার রাস্তায় টেবিল বসানো নিয়ে ওই দুই দোকানের কর্মচারী বাপ্পী ও কাওসারের মধ্যে বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে কাওসারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বাপ্পী সেখান থেকে চলে যান।

রাত ১১টার দিকে বাপ্পীর পক্ষ হয়ে সাদা টি-শার্ট পরিহিত এক যুবকের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন নিউমার্কেটে যান। সাদা টি-শার্ট পরিহিত ওই যুবকের হাতে রামদা ছিল। তাঁরা ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডে গিয়ে কাওসারের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন। তখন কাওসারের সঙ্গে থাকা ব্যক্তিরা ছুরি ও চাপাতি নিয়ে তাঁদের ধাওয়া করেন। পরে রাত ১২টার দিকে ধাওয়া খাওয়া দলটি ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে নিউমার্কেটে গিয়ে হামলা করে।

ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র বলেন, কলেজটির ছাত্রলীগের কয়েকজনের সঙ্গে ক্যাপিটাল ফাস্ট ফুডের কর্মচারী বাপ্পীর সখ্য আছে। তাঁদের মধ্যে নিউমার্কেটকেন্দ্রিক ‘লেনদেনের’ সম্পর্ক রয়েছে। তাই তাঁদের ডাকে সাড়া দিয়ে কিছু ছাত্র সেখানে যান। নিউমার্কেটে হামলা করতে ছাত্রদের হল থেকে বের করেছিলেন ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতা সামাদ আজাদ ওরফে জুলফিকার, মাইনুল হাসান ওরফে সোহাগ, ফুয়াদ হাসান, সরকার লিখন প্রমুখ।

দোকানমালিকদের দাবি, সোমবার রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে গিয়ে বিপণিবিতানটির দুটি ফটক ভেঙে ফেলেন ঢাকা কলেজের ছাত্ররা। এ সময় কিছু দোকানে ভাঙচুর চালানো এবং কয়েকজনকে মারধর করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় দোকানমালিক ও কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে ছাত্রদের ধাওয়া দেন। রাত আড়াইটা পর্যন্ত পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে। ককটেল বিস্ফোরণও ঘটানো হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ও জলকামান ব্যবহার করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার কথা জানান।

সকাল থেকে আবার সংঘর্ষ

সোমবার রাতের পর গতকাল সংঘর্ষ শুরু হয় সকাল সাড়ে ১০টায়। তবে এর আগেই ঢাকা কলেজের ছাত্ররা রাস্তায় নেমেছিলেন।

সাত কলেজ আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ঢাকা কলেজের ছাত্র ইসমাঈল সম্রাট বলেন, ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে সোমবার রাতে ‘পুলিশি আক্রমণের’ প্রতিবাদে তাঁরা সকাল সাড়ে নয়টায় নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করতে যান। এ সময় নিউমার্কেট থেকে ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা ছাত্রদের ওপর ইটপাটকেল ও পাথর নিক্ষেপ শুরু করেন। এ কারণে আবারও সংঘর্ষ বাধে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা কলেজের ছাত্রদের একটি অংশ কলেজের ছাদে, আরেকটি অংশ চন্দ্রিমা মার্কেটের সামনে রড-লাঠিসোঁটাসহ অবস্থান নেয়। অন্যদিকে নিউমার্কেট ছাড়াও আশপাশের অন্যান্য বিপণিবিতানের দোকানমালিক, কর্মচারী ও ফুটপাতের হকাররা লাঠিসোঁটা হাতে রাফিন প্লাজা, বলাকা সিনেমা হল ও গাউছিয়া মার্কেটের সামনে অবস্থান নেন।

ছাদে থাকা ছাত্ররা দোকানমালিক ও কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও শোনা যায়। রাস্তায় থাকা দোকানমালিক ও কর্মীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া।

সংঘর্ষ থামাতে প্রথম আড়াই ঘণ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি। বেলা একটার দিকে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। দেখা যায়, পুলিশের ধাওয়ায় ঢাকা কলেজের ছাত্ররা কলেজ এলাকার দিকে বারবার পিছু হটেছেন। এ সময় দোকানমালিক ও কর্মীরা পুলিশের পিছু পিছু এসে ছাত্রদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন।

দিনভর এ রকম পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ চলে। এর মধ্যে দুপুরের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশও কিছুক্ষণ পরপর সাঁজোয়া যান থেকে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের রাস্তা থেকে সরিয়ে ক্যাম্পাসে নিয়ে যান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। এ সময় কলেজের মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর কয়েকজন দোকানমালিক ও কর্মী ঢাকা কলেজের ফটকে গিয়ে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এরপর বিকেল সোয়া চারটার দিকে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে ছাত্ররা তাঁদের ধাওয়া দেন।

বিকেল পাঁচটার দিকে সংঘর্ষ কিছুটা স্তিমিত হয়। এর আগে বিকেল সোয়া চারটার পর নিউমার্কেট এলাকায় দ্রুতগতির মুঠোফোন ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়, যা চালু হয় রাত সাড়ে আটটার পর।

পথচারীর মৃত্যু

নিহত নাহিদ ডি-লিংক নামের একটি কুরিয়ার সার্ভিসের ‘ডেলিভারিম্যান’ হিসেবে কাজ করতেন। তাঁর বাবা নাদিম হোসেন প্রথম আলোকে জানান, তাঁর তিন ছেলের মধ্যে নাহিদ সবার বড়। নাহিদ সাত মাস আগে বিয়ে করেছেন। গতকাল সকালে তিনি কর্মস্থল এলিফ্যান্ট রোডের উদ্দেশে কামরাঙ্গীরচরের বাসা থেকে বের হন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, দুপুরে নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের মধ্যে মাথায় আঘাত পান নাহিদ। আরও কয়েকজন আহত ব্যক্তির সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন পথচারীরা। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তাঁর মৃত্যু হয়।

এদিকে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে মোশাররফ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এই শিক্ষার্থীর উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে তাঁকে দেখতে যান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়েও আহতদের খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি সবার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান।

ডিএমপির রমনা জোনের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, সোমবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল পর্যন্ত সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে পুলিশের অন্তত ২৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রমনা জোনের অতিরিক্ত কমিশনার, নিউমার্কেট-ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার, নিউমার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পুলিশের উপপরিদর্শক ও সহকারী উপপরিদর্শক আছেন।

সাংবাদিকদের ওপর হামলা

এই সংঘর্ষের ঘটনার খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া ১২ জন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন। তাঁদের কয়েকজনকে দোকানমালিক, কর্মী ও হকাররা মারধর করেন। কেউ কেউ পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল ও দুই পক্ষের নিক্ষেপ করা ইটের আঘাতে আহত হন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন দীপ্ত টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আসিফ সুমিত ও ক্যামেরা পারসন ইমরান হোসেন, দ্য ডেইলি স্টার-এর ফটোসাংবাদিক প্রবীর দাস, ঢাকা পোস্টের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জসিম উদ্দিন, মাইটিভির প্রতিবেদক ড্যানি ড্রং প্রমুখ।

ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সমর্থনে বিক্ষোভ

ঢাকা কলেজের ছাত্রদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেন একদল ছাত্র। তাঁদের নেতৃত্ব দেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা কামাল খান, শেখ স্বাধীন মো. শাহেদ, শামীম পারভেজ ও মোশকাত হোসেন। এরপর তাঁরা মিছিল নিয়ে নীলক্ষেত মোড়ে যান। সেখানে তাঁরা ঢাকা কলেজের ছাত্রদের ওপর হামলার অভিযোগ তুলে পুলিশের ওপর ক্ষোভ দেখান।

বেলা তিনটার দিকে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের পক্ষে বিক্ষোভ করেন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রীরা। তাঁদের বিক্ষোভে দোকানমালিক ও কর্মীরা বাধা দেন। পরে ছাত্রীরা নীলক্ষেত মোড়ে গিয়ে অবস্থান নেন।

এ ছাড়া ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা গতকাল কর্মসূচি পালন করেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ

নিউমার্কেট এলাকায় এই সংঘর্ষ চলাকালে নানান বক্তব্য উঠে আসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। কেউ কেউ অভিযোগ করছিলেন, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রায়ই ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়। এর কারণ চাঁদাবাজি। আবার কেউ কেউ বলেন, নিউমার্কেট এলাকার বিপণিবিতানের দোকানমালিক ও কর্মীরা পণ্যের উচ্চ দাম হাঁকান। দর-কষাকষি করতে গেলে তাঁরা কটূক্তি করেন। নারী ক্রেতাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন।

দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রাণ হারানো নাহিদকে নিয়ে শোক প্রকাশ করেন কেউ কেউ। আবু সালেহ নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতি ও ঢাকা কলেজ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নাহিদের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক।

প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার কে এই রূপা

কোন মন্তব্য নেই

রবিবার, জানুয়ারি ২৩, ২০২২

প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ে অডিটর নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে প্রশ্নফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। এই প্রশ্নফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাজধানীর কাফরুল ও কাকরাইল থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এর মধ্যে একজন মাহবুবা নাসরিন রূপা। তিনি বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেত্রী।

মাহবুবা নাসরিন রূপার ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, তিনি ছাত্রলীগ ইডেন মহিলা কলেজ শাখার সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক। একই কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদকেরও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে ২০১৮ সালে দুপচাঁচিয়া উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান মজনু শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, মাহবুবা নাসরিন রূপা ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রী। বর্তমানে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে দলীয় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘তার গ্রেপ্তারের খবর কেবলমাত্র শুনলাম। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

দুপচাঁচিয়া উপজেলার একাধিক ব্যক্তি জানান, মাহবুবা নাসরিন রূপা নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান হলেও তিনি এলাকায় সেভাবে থাকেন না। মাঝেমধ্যে আসেন, আবার চলে যান ঢাকায়। এলাকায় আসলে আওয়ীমী লীগের জাতীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকায় তার তোলা ছবি মোবাইল ফোনে লোকজনকে দেখাতেন তিনি। তার গ্রামের বাড়ি উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ভূঁইপুর গ্রামে। নির্বাচনে দলীয় নেতাকর্মীদের সমর্থন ছিল তার প্রতি।

ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মাহবুবা নাসরিন প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা। নিয়োগের কথা বলে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতেন তিনিসহ কয়েকজন।

ডিবি কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য শুক্রবার ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। ডিবির গুলশান বিভাগ তথ্য পায়-চক্রের সদস্যরাই পরীক্ষার্থী সেজে কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে যায়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তারা ডিভাইসের মাধ্যমে চক্রের অপর সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বাইরে থেকে তারা প্রশ্ন সমাধান পাঠিয়ে দেয় কেন্দ্রে। চাকরি প্রার্থীদের এভাবেই তার পাস করাতেন তারা। এর জন্য প্রতি চাকরি প্রার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা নিতেন। অগ্রিম হিসেবে নেওয়া হত দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা।

অভিযান-১০ লঞ্চে আগুনের ঘটনায় প্রতিবেদন আগামীকাল

কোন মন্তব্য নেই

শুক্রবার, জানুয়ারি ২১, ২০২২

এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন ও হতাহতের প্রকৃত কারণ উদঘাটন, দায়ীদের চিহ্নিতকরণ ও ঝুঁকি মুক্ত জনবান্ধব নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ‌নাগরিক তদন্ত কমিটির করা তদন্ত সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। আগামীকাল শনিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির দ্বিতীয় তলার সাগর-রুনি মিলনায়তনে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে। 

এতে সভাপতিত্ব করবেন নাগরিক তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান। 

আজ শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) নাগরিক তদন্ত কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আশীষ কুমার দে’র স্বাক্ষারিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,  গত ২৪ ডিসেম্বর গভীররাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীভর্তি ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চে অগ্নিকান্ড ও হতাহতের ঘটনায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা), নিরাপদ নৌপথ বাস্তবায়ন আন্দোলন, নৌ-সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি, মানবাধিকার উন্নয়ন কেন্দ্র এবং সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনসহ ১৬টি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ১৯ সদস্যের একটি নাগরিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নাগরিক কমিটির ‘তদন্ত প্রতিবেদন’ আগামীকাল ২২ জানুয়ারি ২০২২, শনিবার, বেলা ১১টায় প্রকাশ করা হবে।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ গ্রহন করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।

 

আলাল' ইস্যুতে বিএনপি কি লজ্জিত?

কোন মন্তব্য নেই

শুক্রবার, ডিসেম্বর ১০, ২০২১

বিরোধী রাজনৈতিকদের নেতা-কর্মীদের সম্পর্কে দলের নেতাদের নোংরা অশ্লীল মন্তব্য করা নিয়ে বিপাকে পড়েছে বিএনপি। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে অশ্লীল শব্দ ব্যবহারে বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করছেন। আলালের ওই বক্তব্যটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরছে বহুদিন ধরে। বক্তব্যটি অত্যন্ত নিম্ন রুচির। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরাসরি কিছু না বললেও দলের অনেক নেতাই আলালের মন্তব্যে বিব্রত বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল এ জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানা যায়নি। অন্যদিকে সুশীল সমাজ থেকে শুরু করে নারীবাদীরাও চুপ। আলালের বিরুদ্ধে একটি বিবৃতিও দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় রাজনীতিবিদদেরই নিজেদের মান মর্যাদা, শালীনতা রক্ষা করার এখন চূড়ান্ত সময় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, আলাল প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে অশালীন কথা বলছেন। প্রধানমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এখন কপালে তিলক চন্দন দেয়। আর মোদির সঙ্গে গিয়ে ফষ্টিনষ্টি করে। এইতো চলছে।’ আলাল একজন নারীর বিষয়ে ‘ফষ্টিনষ্টি’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন। নারীকে হেয় করা, গালি দেয়া পুরুষতন্ত্রের  বহুদিনের চর্চা। এই আপত্তিজনক শব্দের তীব্র বিরোধীতা করা দরকার। রাজনীতিতে বিরোধিতা থাকবে। পক্ষ বিপক্ষ থাকবে। এখানে নোংরামি আসবে কেন? ইতোমধ্যে ডা: মুরাদ হাসান অশালীন, কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা খুইয়েছেন। তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। তার সংসদের পদও হারাতে পারেন। মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা হবার সম্ভাবনাও আছে। কুরুচিপূর্ণ, অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করার জন্য যদি একজনকে সব হারাতে হয়, দল ব্যবস্থা নেয়, তাহলে  বিএনপি নেতৃত্বকেও এর জবাব দেওয়া উচিত যে, তারা আলালের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নিলেন। 

বিএনপিতে শুধু আলাল একাই নন, যে  অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করছে। বিএনপির অনেক নেতাই একাধিকবার নারীদের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন। আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। বিএনপির নতুন প্রজন্মের নেতা ইশরাক হোসেন যে গালাগালি করেছেন তাতে নিজেকে মুরাদের কাতারেই নামিয়ে এনেছেন বলে অনেকে মনে করছেন। তিনি বলছেন, মুরাদকে তিনি পেটাবেন। তাই নয়, মুরাদকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলেছেন! এটা বক্তৃতা নয় জঘন্য গালি। গালি অপরাধী মুরাদকে দিন, তার পিতাকে কেন? এ ছাড়াও সাংসদ রুমিন ফারহানা, সাবেক সাংসদ আসিফা আশরাফী পাপিয়া, রেহানা আক্তার রানু, শাম্মী আখতাররা সংসদে দাঁড়িয়ে শিষ্টাচার বর্জিত যেসব মন্তব্য করেছেন, তা কোনোভাবেই রাজনীতির ভাষা হতে পারে না। 

আমরা একটা নতুন দুনিয়াতে বাস করি। আমাদের উচিত এসব নিয়ে কথা বলা। কিন্তু সুশীল সমাজসহ নারীবাদী নেতৃত্বের এ নিয়ে ভ্রুক্ষেপ নেই। অথচ মুরাদের বক্তব্যের পর ৪০ জন নারীবাদী নেতা তার সমালোচনা করলেন। বিবৃতি দিলেন। সুশীল সমাজ মুরাদের বক্তব্য নিয়ে গোটা আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন। মুরাদের আপত্তিকর বক্তব্যকে তারা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করলেন। তাহলে কি শুধু আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মী যখন আপত্তিকর মন্তব্য করবে সেটি অপরাধ হবে? আর বিএনপির কেউ করলে সেটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না? বিএনপি নেতৃত্বকে এসব দেখা উচিত বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশালীন, কুরুচিপূর্ণ ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দেওয়ায় আলালের দল ও রাজনীতি থেকে ইস্তফা দেওয়া উচিত। আলাল যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের চরম পরিপন্থী, অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অসভ্যতার চরম উদাহরণ। কোনো সভ্য সমাজের সভ্য রাজনৈতিক কর্মী এ ধরণের কথা বলতে পারে না। আলালের রাজনীতিতে থাকা উচিত নয়। কিন্তু দু:খজনক হলো বিএনপি নেতৃত্ব এ ধরনের অশালীন বক্তব্যকে প্রশ্রয় দিচ্ছেন। যেখানে আওয়ামী লীগ অশালীন বক্তব্যকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না, সেখানে বিএনপিরও আওয়ামী লীগের কাছ থেকে শেখা উচিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

Mahi & Dr Murad এর পুরনো টেলি আলাপচারিতা ফাঁস করলো কারা?

কোন মন্তব্য নেই

বুধবার, ডিসেম্বর ০৮, ২০২১

বিতর্কিত মন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান পদত্যাগ করেছেন। মুরাদ হাসানের পদত্যাগের পিছনে যে অডিও ক্লিপটি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে সেটি হলো চিত্রনায়ক ইমন এবং চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে মুরাদ হাসানের টেলি আলাপচারিতা। এই টেলি আলাপচারিতাটা সাম্প্রতিক নয়। এটি এক বছরের বেশি আগের মাহি নিজেও স্বীকার করেছেন যে, এটি ২০২০ সালের। তাহলে প্রশ্ন উঠল যে, ২০২০ সালের অডিও ক্লিপ এখন বাজারে ছাড়লো কারা? বা এই অডিও ক্লিপটি রেকর্ড করলো কারা? এর উত্তরের ভিতরে অনেক রাজনৈতিক রহস্য লুকিয়ে আছে বলে অনেকেই মনে করছেন। এখন এই অডিও ক্লিপ নিয়ে আজ ডিবি এবং র‍্যাবের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইমন। ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, মাহিয়া মাহি সৌদি আরব থেকে ঢাকায় ফিরলে তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কিন্তু এই পুরো ঘটনায় তিনটি প্রশ্ন সামনে এসেছে।

প্রথমত, মাহিয়া মাহি এবং ইমনের সঙ্গে ডা. মুরাদ হাসানের কথোপকথন রেকর্ড করলো কারা? বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী এ ধরনের আড়িপাতা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নিক্সন চৌধুরীর এক মামলায় অ্যাডভোকেট শাহদীন মালিক হাইকোর্টে আইন দেখিয়ে বলেছিলেন যে, নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে ডিসির যে টেলি আলাপচারিতা সেই টেলি আলাপচারিতা যারাই রেকর্ড করেছে তারাই শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছে এবং এই যুক্তির ভিত্তিতে নিক্সন চৌধুরীকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছিল। এখন প্রশ্ন হলো যে, একবছর বা দুই বছর আগের এই আলাপচারিতা কারা রেকর্ড করলো? এটি যারা রেকর্ড করেছে তারা কি অনুমতি নিয়ে করেছে বা তারা কি সঠিক কাজ করেছে কিনা সেই প্রশ্ন উঠেছে। কারণ এরকম যদি অডিও রেকর্ড করা হয় তাহলে এটি একটি ভয়ঙ্কর ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘন বলে অনেকে মনে করছেন।

দ্বিতীয় প্রশ্ন হলো যে, এই ফোনালাপটি এতদিন পরে ফাঁস করা হলো কেন? সাম্প্রতিক সময়ে ডা. মুরাদ খুব স্পষ্ট করে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলছিলেন। তার এই স্পষ্টবাদিতা কিছু কিছু বিষয় আপত্তিকর, আবার কিছু কিছু বিষয় সত্য। যেমন রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে তিনি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন সেই বক্তব্য একসময় বিএনপি-আওয়ামী লীগ এমনকি জামায়াতের বক্তব্য ছিলো। তিনি বিরোধী রাজনীতি নিয়ে যে চাঁচাছোলা সমালোচনাগুলো করতেন সেই সমালোচনাগুলো আলোচনার দাবি রাখে। তবে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমা সম্বন্ধে যে কথাগুলো বলেছেন তা অরুচিকর, কদর্য এবং আপত্তিকর। তাহলে কি মুরাদ বলির পাঠা হয়েছিলেন? মুরাদকে কেউ ব্যবহার করেছিল? এই ব্যবহার করার পর তাকে বলির পাঠা বানিয়ে ছুড়ে ফেলে দেয়া হলো? নাকি মুরাদই কারো এজেন্ট হিসেবে সরকারকে বিব্রত করার জন্য এবং সরকারের ভাবমূর্তি নষ্টের জন্য এরকম খেলায় মেতেছিলেন? এই বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা দরকার।

এখন নির্বাচনের দুই বছরের মত সময় আছে। এই সময়ে এরকম অনেক কিছুই ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অনেকেই মনে করেন যে, মুরাদের এই ঘটনাটি আসলে একটি কৌশল। সরকার মুরাদকে ব্যবহার করেছে। যখন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়া এবং ছাত্রদের আন্দোলন তখন পুরো দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করা যায় করার ক্ষেত্রে মুরাদ তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছেন। আর এই কারণেই এতদিন পর তার এই অডিও টেপ বাজারে এসেছে। কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যা সেটি পরের বিষয় কিন্তু রাজনীতিতে এই ধরনের খেলা যদি সামনের দিকে হতে থাকে তাহলে তা একটা ভয়ঙ্কর বার্তা দেবে বলে মনে হয়। মুরাদ যেটি করেছেন সেটি নিঃসন্দেহে গর্হিত, অরুচিকর এবং আপত্তিকর। একজন রাজনীতিবিদ এরকম শিষ্টাচার বিরোধী নোংরা কথাবার্তা বলতে পারেন না। কিন্তু দীর্ঘদিনের পুরনো ঘটনাটি যেভাবে সামনে আনা হলো সেটি কারা কিভাবে আনলো সেটিও খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করছেন।

সুত্র: বাংলাইনসাইডার

শুধু মুরাদই অপরাধী?

কোন মন্তব্য নেই

মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ০৭, ২০২১

নারীর প্রতি অবমাননা, কটূক্তি, অশালীন মন্তব্য ইত্যাদি কারণে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী যে নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে এবং কুৎসিত নোংরা রাজনীতিকে লালন করেন না, এই পদত্যাগের মধ্য দিয়ে সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। মুরাদের অশালীন কাণ্ড কখনোই সমর্থন যোগ্য নয়। এরকম অশালীন, দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য কোনো রাজনৈতিক নেতার করা উচিত না। মুরাদ যে কথাগুলো বলেছে, সে কথাগুলো গর্হিত, নীতিবিবর্জিত এবং অরুচিকর। কিন্তু আমরা দেখি যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইডেন থেকে তারেক জিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় যেভাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি, বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং অন্যান্যদের সম্বন্ধে অরুচিকর, কুৎসিত, নোংরা মন্তব্য করা হয়।

আমরা দেখলাম মুরাদের বক্তব্যের পর ৪০ জন নারীবাদী নেতা মুরাদের বক্তব্যের সমালোচনা করলেন। সুশীল সমাজ মুরাদের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানালেন এবং আপত্তিকর বক্তব্যকে তারা অমার্জনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করলেন। তাদের এ পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। আমরা মনে করি যে সুশীল সমাজ সবসময় এ ধরণের সংকটে, এ ধরণের পরিস্থিতিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবেন। পথ দেখাবেন। কিন্তু আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি, বিএনপির একাধিক নেতা একাধিকবার নারীদের প্রতি অসম্মান দেখিয়েছেন। আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। কুৎসিতভাবে বিরোধী নারী নেত্রীদেরকে উদ্দেশ্য করে জঘন্য ভাষায় গর্হিত, নীতিবিবর্জিত এবং অরুচিকর মন্তব্য করেছেন। বিশেষ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল অথবা কথিত নতুন প্রজন্মের নেতা ইশরাক হোসেন কিংবা লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালিকদের নোংরা মন্তব্যগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে। কুৎসিত, নোংরা মন্তব্য করতে বিএনপির নারী নেত্রীদেরও জুড়ি নেই। সাবেক বিএনপি সাংসদ আসিফা আশরাফী পাপিয়া, রেহানা আক্তার রানু, শাম্মী আখতার, সাংসদ রুমিন ফারহানা সংসদে দাঁড়িয়ে শিষ্টাচার বর্জিত যেসব কুৎসিত মন্তব্য করেছেন, তা কোনো সভ্য মানুষের শুনতে ও বলতে রুচিতে বাজবে। শুধুমাত্র তাদের রাজনীতি করে না বলে বিরোধী রাজনৈতিকদের প্রতি এমন সব ভাষা ব্যাবহার করেছেন, তা কোনো ভদ্রলোকের সন্তানের হাত দিয়ে লেখাও সম্ভব না। বিএনপি নেতাদের এসব উদ্ধত্বপূর্ণ আচরণ নিয়ে একটি বিবৃতিও দেয়নি সুশীল সমাজ কিংবা নারীবাদী নেতারা। পাশাপাশি যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা কিংবা সুইডেন থেকে কুৎসিত, নোংরা, আপত্তিকর কথা বলে, তখন সুশীল সমাজ কোথায় থাকেন?

আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢুকলেই দেখি প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে নানা আপত্তিকর মন্তব্য, বঙ্গবন্ধু পরিবার সম্পর্কে কুৎসিত, নোংরা মন্তব্য করা হচ্ছে। এই সমস্ত ব্যাপারে আমাদের সুশীল সমাজ নীরব কেন? তাহলে কি সুশীল সমাজের কোনো পক্ষ আছে? আমরা খুশি হবো নারীবাদীরা যেভাবে মুরাদের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, ঠিক একইভাবে এই সমস্ত গর্হিত, নীতিবিবর্জিত এবং অরুচিকর মন্তব্যগুলোর ব্যাপারেও তারা সোচ্চার হবেন এবং এগুলোকে বয়কট করবেন। এ ধরণের কুৎসিত মন্তব্য কোনো রাজনৈতিক দলের ভাষা না। 

আমরা জানি, তারেক জিয়ার পৃষ্ঠপোষকতায় এই সমস্ত নোংরা অপপ্রচারগুলো হচ্ছে। এমনকি মুরাদের এই বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং বিভিন্ন জায়গায় যেসমস্ত বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে, সে সমস্ত বক্তব্যগুলো কতটুকু গ্রহণযোগ্য? এসব বক্তব্যেও নারীদের যে অবমাননা করা হচ্ছে, তার প্রতিকার কে করবে? তাহলে কি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের কোনো নেতা কর্মী যখন নারীর প্রতি অসম্মান জনক বক্তব্য রাখলে সেটিই অপরাধ আর বিএনপির কেউ যদি নোংরা, আপত্তিকর বক্তব্য রাখে সেটি অপরাধ নয়? 

সৌজন্যে: বাংলাইনসাইডার


সেই প্রতিরোধ কি আর করতে পারবে আওয়ামী লীগ?

কোন মন্তব্য নেই

শুক্রবার, অক্টোবর ২৯, ২০২১

২০০৬  সালের আজকের দিনে এক অভূতপূর্ব গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল আওয়ামী লীগ। নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবী এবং অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে যখন উত্তাল আন্দোলন তখন আওয়ামী লীগকে নিঃশেষ করার আরেকটি পরিকল্পনা নিয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর ছিল বিএনপি-জামায়াত জোটের শেষ দিন। এদিন একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ছিল বিএনপি-জামায়াত জোটের। আর সেই দিনই নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার যেন কোণঠাসা থাকে এবং বিএনপির কথা মতো সব কিছু করে সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই বিএনপি-জামায়াত জোট আওয়ামী লীগ অফিস আক্রমণ এবং আগুন লাগিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। আর সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে পল্টন এলাকায় জামায়াতের সহস্র নেতা কর্মী জমায়েত হয়েছিল। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গিয়ে আওয়ামী লীগ অফিস জালিয়ে দেয়া।

আওয়ামী লীগ দিন প্রতিরোধ গড়েছিল। নিরস্ত্র, সাধারণ জনগণকে সাথে নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা, বিশেষ করে যুব লীগের নেতা কর্মীরা অসীম সাহসের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াত জোটের এই আক্রমণের পাল্টা জবাব দিয়েছিল। সেই প্রতিরোধকে বিএনপি-জামায়াত জোট লঘি বৈঠার সন্ত্রাস বলে অভিহিত করে। বাস্তবে কি লঘি বৈঠা দিয়েই আওয়ামী লীগ প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল বিএনপি-জামায়াতের সশস্ত্রদের বিরুদ্ধে। এবং সেই প্রতিরোধ যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ জয় হয়। সেই সময় আওয়ামী লীগের কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের শক্তি পুরো জাতিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। আজ ১৫ বছর পর আওয়ামী লীগ যদি ফিরে তাকায় তাহলে আওয়ামী লীগেরই অনেকে প্রশ্ন করেন সেই প্রতিরোধের শক্তি কি আওয়ামী লীগের আর আছে? সামনের দিনগুলোতে কি আওয়ামী লীগ এমন নিবেদিত প্রাণ, ত্যাগী এবং শক্ত যোদ্ধা পাবে যারা দুঃসময়ে অকুতোভয় হয়ে নিজের জীবন বাজি রেখে রুখে দাঁড়াতে পারবে।

গত ১৩ বছর ধরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় রয়েছে। এই ক্ষমতায় থাকার কারণে আওয়ামী লীগের সংগঠনের  মধ্যে যেমন বিতর্কিত, অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে অন্যদিকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী পরীক্ষিত নেতারা কোণঠাসা হয়েছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই এখন আয়েশি ভাব চলে এসেছে। রকম বাস্তবতায় সামনে যখন আওয়ামী লীগ সঙ্কটে পড়বে ২০০৬ এর ২৮ অক্টোবরের মতো তখন প্রতিরোধের শক্তি কি আওয়ামী লীগের আছে। এখন বিরোধী দলের রাজনৈতিক আন্দোলন আওয়ামী লীগকে মোকাবেলা করতে হয় না। পুলিশ, প্রশাসন যেন আওয়ামী লীগের ভূমিকায়  অবতীর্ণ হয়। আর প্রশাসন, পুলিশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। একটি রাজনৈতিক দলের রাজনৈতিক শক্তি যদি প্রশাসনের উপর নির্ভরশীলতা বাড়ে তাহলে সেই সংগঠন  দুর্বল হতে বাধ্য। আওয়ামী লীগ কি সেভাবে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, এই প্রশ্ন আওয়ামী লীগের অনেকের মাঝে। সে কারণে এখন প্রশ্ন উঠেছে ২০০৬ এর সেই শৌর্যবীর্য এবং সাংগঠনিক শক্তি আওয়ামী লীগের কি এখন আছে? এর উত্তরের আওয়ামী লীগের অনেক নেতারা নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।

বাংলাইনসাইডার

Don't Miss
©dnn24live all rights reserved
design by khyrul islam