Responsive Ad Slot

Weather - Tutiempo.net
Padma Bridge লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Padma Bridge লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

পদ্মা সেতু: দুই যুগ আগের স্বপ্ন

কোন মন্তব্য নেই

মঙ্গলবার, জুন ২১, ২০২২


পদ্মা সেতুর প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই হয় দেশীয় অর্থায়নে। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা নদীতেও একটি সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেন। ১৯৯৯ সালের মে মাসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের জন্য প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা (প্রি-ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু হয়। বলা যায়, এটাই দালিলিকভাবে পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সূত্রপাত। এ হিসাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের যাত্রা প্রায় দুই যুগের। 

জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার অর্থায়নে ২০০৩ সালের মে থেকে তৎকালীন সরকারের সময়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা শেষ হয়েছিল ২০০৫ সালে। পরের বছর ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশগত প্রভাব মোকাবিলায় করণীয় নিয়ে পরিকল্পনা করা হয়। সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষার সময় জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই সেতুর একটি প্রাথমিক নকশা তৈরি করে। তবে তারা জানিয়ে দেয় যে সেতু নির্মাণের আগে পূর্ণাঙ্গ নকশা প্রণয়ন করতে হবে। 

পদ্মা সেতু প্রকল্পের একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ৮ হাজার ৫৮৮ কোটি টাকা। ২০০৫ সালের ১৯ অক্টোবর ডিপিপি অনুমোদনের জন্য পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। তবে তখনকার সরকার ডিপিপি অনুমোদন করে যেতে পারেনি।

পদ্মা সেতুর বিশদ নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগে ২০০৭ সালে দরপত্র আহ্বান করে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার। ওই বছর আগস্টে পদ্মা সেতু নির্মাণে একটি ডিপিপি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা। ডিপিপিতে ২০১৫ সালের মধ্যে সেতু নির্মাণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের কাজটি চূড়ান্ত করলেও নিয়োগ দিতে পারেনি।

প্রাক্-সম্ভাব্যতা ও সম্ভাব্যতা যাচাই কেন করতে হয়, সেই কৌতূহল জাগতে পারে। বিষয়টি হলো, পদ্মা নদীতে সেতু কেন দরকার, নির্মাণে ব্যয় কত হতে পারে, কোন জায়গায় সেতু নির্মাণ করলে ব্যয় কম হবে, সেতু নির্মাণে বিনিয়োগ অর্থনৈতিকভাবে কতটা যৌক্তিক হবে, সমীক্ষায় এসব বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। এরপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে প্রস্তাব দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।

প্রাক্-সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে আরপিটি-নেডকো-বিসিএল নামের যৌথ উদ্যোগের একটি প্রতিষ্ঠান। তারা ১৯৯৯ সালের মে থেকে ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কাজ করে প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিষ্ঠানটি পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং মাওয়া-জাজিরা—এ দুটি পথ দিয়ে সেতু নির্মাণের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করে।

দেখা যায়, মাওয়া-জাজিরা এবং পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ—এই দুই পথেই মূল সেতুর দৈর্ঘ্য দাঁড়াবে ৬ কিলোমিটারের কিছু বেশি। তবে মাওয়া প্রান্তে নদীর তীর স্থিতিশীল। এ কারণে নদীশাসনে ব্যয় কম পড়বে। তারা দেখায় যে পাটুরিয়ার তুলনায় মাওয়া দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হলে যাতায়াত খরচ কমবে, পুনর্বাসনে ব্যয় কম হবে এবং নদীশাসন সহজ হবে। প্রক্ষেপণ অনুসারে, মাওয়া-জাজিরা দিয়ে সেতু নির্মিত হলে যানবাহন বেশি চলবে।

সুত্র: প্রথম আলো

পদ্মা সেতু কেন জরুরি

কোন মন্তব্য নেই

সোমবার, জুন ২০, ২০২২

দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন থেকে শুরু করে দেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রবৃদ্ধির বিকাশে পদ্মা সেতু সহায়ক হবে। গত এক যুগে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনৈতিক তৎপরতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। সেই বিবেচনায় এখন পদ্মা সেতুর তাৎপর্য অনেক বেশি।

পদ্মা সেতুর বড় দিক হলো মধ্যপশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ফেরি পারাপারের দীর্ঘ সময় অপচয় ও ভোগান্তির অবসান। এর অর্থনৈতিক উপযোগ হচ্ছে কর্মমুখী যাত্রী ও পণ্যবাহী যানের সময়, জ্বালানি খরচ, শ্রমঘণ্টা সাশ্রয়। এ অঞ্চলকেন্দ্রিক কাঁচা ও পচনশীল কৃষি ফলন ও মৎস্য অর্থনীতিকে গতিশীল করবে পদ্মা সেতু।

পদ্মা, যমুনা, মেঘনা—এই তিন নদী বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে মূল তিনটি ভাগে ভাগ করেছে। ঢাকা ঘিরে মধ্যাঞ্চল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ নিয়ে পূর্বাঞ্চল এবং রাজশাহী, রংপুর, খুলনা ও বরিশাল নিয়ে পশ্চিমাঞ্চল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর পর্যায়ক্রমে সড়ক যোগাযোগ বিস্তৃত হয়েছে। মেঘনা, মেঘনা-গোমতী, বঙ্গবন্ধু ও ভৈরব সেতু নির্মাণের ফলে মধ্য, পূর্বাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সম্ভব হয়। সারা দেশকে সড়ক যোগাযোগে এক সুতায় বাঁধার কাজটি আটকে ছিল পদ্মা নদীর কারণে।

মুন্সিগঞ্জের মাওয়া দিয়ে ফেরিতে ওঠার পর পদ্মা নদী পার হতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া দিয়ে লাগে ৩৫ থেকে ৪০ মিনিট। মাওয়া ফেরিঘাটে যাত্রীবাহী যানবাহনকে গড়ে দুই ঘণ্টা ও পণ্যবাহী যানকে আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষায় থাকতে হয়। অবশ্য ঈদ, বড় ছুটি অথবা শীতে ঘন কুয়াশায় ফেরিঘাটে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টাও অপেক্ষা করার নজির রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) দারিদ্র্য মানচিত্র অনুযায়ী, পদ্মার ওপারের ২১টি জেলায় ১৩৩টি উপজেলা আছে। এর মধ্যে ৫৩টি উপজেলা উচ্চ দারিদ্র্য ঝুঁকিতে আছে। এসব উপজেলার মধ্যে ২৯টি বরিশাল বিভাগে। এ ছাড়া ৪২টি উপজেলা মধ্যম দারিদ্র্য এবং ৩৮টি নিম্ন দারিদ্র্য ঝুঁকিতে আছে। সেতু চালুর পর ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হলে দ্রুত ওই এলাকার মানুষের আয় বেড়ে দারিদ্র্য বিমোচন হবে।

পদ্মা সেতু কেন জরুরি

বিনিয়োগের দিক থেকে দক্ষিণাঞ্চলের পিছিয়ে থাকার অন্যতম কারণ ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগের সময় ও দূরত্ব। বেনাপোল ও ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি হয়। এসব পণ্যবাহী ট্রাককে যমুনা সেতু ঘুরে কিংবা মাওয়া ফেরি দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। পরিবহন খাতের ব্যবসায়ীরা বলেন, বেনাপোল থেকে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় আসতে এখন ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টা লাগে। পদ্মা সেতু হলে ৬-৭ ঘণ্টায় পণ্য পরিবহন করা যাবে। এতে আমদানি-রপ্তানিতে খরচ ও সময় বাঁচবে।

দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯টি জেলাকে সারা দেশের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে এই সেতু। যোগাযোগ সহজ হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে পদ্মা সেতু। ২০০৫ সালে পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা অনুযায়ী, পদ্মা সেতু চালু হলে ১ দশমিক ২৩ শতাংশ হারে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জিডিপি বাড়বে ২ দশমিক ৩ শতাংশ।

নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে বড় বাধা ছিল পদ্মা

কোন মন্তব্য নেই


পদ্মা পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোতা নদী। ভারতে যেটি গঙ্গা, সেটির নাম বাংলাদেশ অংশে পদ্মা। এটি গঙ্গার প্রধান ধারা। গঙ্গার উৎপত্তি হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ থেকে, যা সমুদ্র থেকে প্রায় সাত হাজার মিটার উঁচুতে। উৎপত্তির পর নদীটি ২ হাজার ৫২০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে।

গঙ্গা নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা দিয়ে। সেখান থেকেই নদীটির নাম হয় পদ্মা। বাংলাদেশে প্রবেশ করে এটি রাজশাহী, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী হয়ে পৌঁছায় গোয়ালন্দ-দৌলতদিয়া-আরিচা পর্যন্ত। দৌলতদিয়ায় পদ্মা ও যমুনা মিলিত হয়। নদীবিজ্ঞানীরা যমুনাকে বলেন ব্রহ্মপুত্র। তাঁদের কাছে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের মিলিত নাম পদ্মা। এরপর পদ্মা-যমুনার মিলিত ধারা চাঁদপুরের কাছে মেঘনার সঙ্গে মিলে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে।

পদ্মা পৃথিবীর সবচেয়ে ভাঙনপ্রবণ নদী হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে বর্ষাকালে এটি কোথায়, কখন ভাঙবে, তার পূর্বানুমান অনেক সময় করা যায় না। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা নাসা এক গবেষণায় জানিয়েছিল, ১৯৬৭ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে ৬৬ হাজার হেক্টরের (প্রায় ২৫৬ বর্গমাইল বা ৬৬০ বর্গকিলোমিটার) বেশি এলাকা পদ্মার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে, যা ঢাকা শহরের আয়তনের দিগুণের বেশি।

এ খরস্রোতা পদ্মা পারাপার দেশের মধ্যভাগ ও পূর্বাঞ্চলের সঙ্গে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগে বড় বাধা। যানবাহন পারাপারের মাধ্যম ফেরি। মানুষ পারাপারের মাধ্যম লঞ্চ, ট্রলার, স্পিডবোট অথবা নৌকা। বর্ষায় পদ্মা যখন ভয়ংকর রূপ নেয়, তখন ছোট নৌযানে নদীটি পাড়ি দেওয়া অনেকটা প্রাণ হাতে নেওয়ার মতো। আর ফেরিঘাটে সারা বছর মানুষকে ভুগতে হয়েছে যানবাহনের দীর্ঘ লাইনে।

বর্তমানে এক্সপ্রেসওয়েকেও সেতু হিসেবে গণ্য করা হয়। সে কারণেই বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকা করা এখন অনেকটা কঠিন। তবে এটি নিশ্চিত করেই বলা যায়, ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমিতে নির্মিত দ্বিতীয় বৃহত্তম সেতু হতে চলেছে পদ্মা সেতু। ভারতের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চল, বাংলাদেশ ও নেপালের দক্ষিণাঞ্চল নিয়ে ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি অঞ্চলে দীর্ঘতম সেতুটি হলো ভারতের আসামের ভূপেন হাজারিকা সেতু। ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীর ওপর নির্মিত ৯ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতু ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামের সঙ্গে অরুণাচলকে যুক্ত করেছে।

Don't Miss
©dnn24live all rights reserved
design by khyrul islam