Responsive Ad Slot

Weather - Tutiempo.net

Latest

latest

দুর্ভাগা জাতি’র কায়েদকে আজ খুব প্রয়োজন

বুধবার, অক্টোবর ২০, ২০২১

/ by DNN24LIVE

সাম্প্রতিক সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনায় সরকারের নীতি নির্ধারকরা তিনটি ব্যর্থতাকে চিহ্নিত করেছেন। প্রথমত প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যর্থতা, দ্বিতীয় গোয়েন্দা ব্যর্থতা, তৃতীয়ত রাজনৈতিক ব্যর্থতা। আর এই তিনটি ব্যর্থতাই ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং এই ব্যর্থতার পেছনে কার দায় কতটুকু তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের দ্বায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা আর ১৯৭১ সালের বিভিষিকাময় পরিস্থিতির কথা উল্যেখ করে ঝালকাঠি তথা বাংলাদেশের অন্যতম ইসলামী ব্যক্তিত্ব, গবেষক ও ধর্ম সংস্কারক মাওলানা আযীযুর রহমান কায়েদ নেছারাবাদী যিনি সংক্ষেপে কায়েদ সাহেব হুজুর নামেও পরিচিত দক্ষিণ বাংলার একজন পীর সাহেবকে স্বরণ করে ভক্তয়ে- হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. নামে একটি ফেজবুক পোষ্ট দেয়া হয় এতে বলা হয়।

১৯৭১ সালের বিভিষিকাময় পরিস্থিতিতে ঝালকাঠি আশেপাশের এলাকার হিন্দুরা বাঁচার কোনো উপায়ন্তর পাচ্ছেন না। সবাই দলবেঁধে আসলেন হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুর রহ. কাছে। হুজুর তখন বরিশাল অঞ্চলে ইসলামী ব্যক্তিত্ব, গবেষক ও ধর্ম সংস্কারক এবং পীর হিসেবে পরিচিত। হুজুর তখন হিন্দুদের সাহস দিয়ে বললেন, নির্ভয় থাকো সব আমি দেখব। সেই সময় প্রায় ৯ মাস হাজার হাজার মানুষের আশ্রয় ও খাবারের বন্দোবস্ত করেন, নিরাপত্তার জন্য দিনরাত বেশ পরিশ্রমও করেন।

তখনকার ওই তাদের দুরাবস্থার সময় হযরত কায়েদ ছাহেব হুজুরকে কাছে অসংখ্য হিন্দুরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার মত প্রকাশ করেন। কিন্তু ওই সময় হুজুর তাদের কালেমা পড়াতে অপরাগতা জানায়। শুধু বললেন- তোমারা এখন মুসলিম হতে চাও জীবন বাঁচানোর জন্যে, আল্লাহর জন্যে নয়। যদি সত্যিই আল্লাহকে ভালোবেসে ইসলাম কবুল করতে চাও, তাহলে দেশের অবস্থা ভালো হলে তখন এসো'

১৯৯০ সালে ভারতের বাবরি মসজিদে হামলার পরে উত্তাল দেশ। বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ। এগিয়ে আসলেন কায়েদ হুজুর, ঝালকাঠি শহরে অনুষ্ঠিত হলো ধর্মীয় সম্প্রীতির ইতিহাসের সবচেয়ে বড় মানব ্যালী। বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মন্দিরের পুরহিত, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী-শিক্ষক, সাধারণ মানুষ দলবেধে অংশগ্রহণ করেন। হুজুর মিনতি করে বলেছিলেন, সারাদেশ লয় হয়ে গেলেও ঝালকাঠিতে কোনো মন্দিরের একটি ইটও যেন সরে না যায়। না, কিচ্ছু হয়নি ঝালকাঠিতে। মন্দিরতো দূরের কথা, একজন হিন্দুধর্মাবলম্বীকে কোনো মুসলিম কটাক্ষও করেননি।

১৯৪২ সাল থেকে ১৯৬৭ টানা ২৫ বছর ছিলেন ছারছিনা মাদ্রাসার শিক্ষক ভাইস প্রিন্সিপ্যাল। এরপর দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করেন শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরমধ্যে নারীশিক্ষা প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। তার নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কামিল মাদরাসা, ঝালকাঠি এন.এস.কামিল মাদরাসাকে তিনি বহুমুখী কমপ্লেক্সে পরিণত করেছেন। ৪২টি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান এই বহুমুখী কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এলাকা থেকে অন্যায় আর দুর্নীতি রুখতে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন এগারটি সংগঠন। আইন-আদালতের চাইতেও মানুষ তার কথাকে বেশি মূল্যায়ন করতো। বছরের পর বছর ধরে ঝামেলাও কায়েদ সাহেব হুজুর সমাধান করতেন। যতই প্রভাবশালী হোক, তিনি ন্যায়ের পক্ষে রায় দিতেন। মানুষ সন্তুষ্টচিত্তে সব মেনে নিতো।

অসুস্থ অবস্থায় কায়েদ সাহেব হুজুর চিকিৎসাধীন ছিলেন ঢাকায় কমফোর্ট হাসপাতালে। এই খবরে ঝালকাঠির সকল মন্দিরে তার জন্য বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। অনেক উপোস থেকেছেন, অনেকে হিন্দু পরিবার বিশেষ প্রার্থনারও আয়োজন করেছিলেন।

মাওলানা আযীযুর রহমান কায়েদ, মানুষের মুখে মুখে কায়েদ সাহেব হুজুর। ২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল ইন্তেকাল করেন। তার ইন্তেকালের খবর শুনে সারা দেশ থেকে লাখ লাখ মানুষ ভিড় জমান ঝালকাঠির নেছারাবাদে। তার নামাজে জানাযায় দশ বর্গকিলোমিটার জুড়ে ছিল কেবল মানুষ আর মানুষ। বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রার্থনা সভা। হাজার হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইয়েরা কায়েদ হুজুরের শেষ বিদায়ে চোখের জল ফেলেছিলেন, উপস্থিত ছিলেন মৃত্যু পরবর্তিতে সকল আনুষ্ঠানিকতায়। তিনদিনের শোক কর্মসূচীও পালন করেন তারা।

বাই/ভকা/খাইরুল

Don't Miss
©dnn24live all rights reserved
design by khyrul islam