Responsive Ad Slot

Weather - Tutiempo.net
Recent Post লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Recent Post লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বরিশাল সংঘাত: সমঝোতার চেষ্টা

কোন মন্তব্য নেই

রবিবার, আগস্ট ২২, ২০২১


গত বুধবার সংগঠিত বরিশালের সহিংসতার ঘটনার পর এখন সমঝোতার চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এবং সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কায়েকজন আমলা এই সমঝোতার চেষ্টা করছেন বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে মেয়রের নির্দেশে ময়লা-আবর্জনাগুলো আজ পরিস্কার করা হয়েছে। যদিও এখনও বরিশালে উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়েছে। অন্যদিকে মেয়রের অনুসারীরা সেখানকার ইউএনও-ওসি এবং আনসারদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু এসবের সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, খুব শিগগিরই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে এবং এটি যে `ভুল বোঝাবুঝি` হয়েছিল তার অবসান ঘটবে। সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, বরিশালের যে ঘটনাটি ঘটেছিল সেই ঘটনাটি যেন আর না বাড়ে সেজন্য সরকার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ`র সঙ্গে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা কথা বলেছেন এবং তাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য তাকে ফোন করে পদত্যাগ বা এ ধরনের বক্তব্য আপাতত না দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন এবং কোনরকম বিতর্কিত বক্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

একইভাবে সরকারের প্রশাসন থেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা ইউএনও কেও কারো সাথে এই বিষয় নিয়ে কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে যে, দীর্ঘদিন ধরেই ইউএনও এবং প্রশাসনের সঙ্গে বরিশাল সিটি মেয়রের সমস্যা চলছিল। পুলিশ প্রশাসনের সাথেও সাদিক আব্দুল্লাহ`র দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আর সেখান থেকেই এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে যে, এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। কিন্তু আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এ কথা অস্বীকার করেছেন। পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর এলাকায় কোনো প্রভাব নেই এবং এ নিয়ে কোনো বিরোধও নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন যে, এমন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে যে পরিস্থিতিতে যেন প্রশাসনকে এবং রাজনীতিবিদদের মুখোমুখি দাঁড় করানো যায়। বরিশালের স্থানীয়রা বলছেন যে, এই ঘটনাটি সহজেই মীমাংসা করা যেত। কিন্তু দুই পক্ষই তাদের পুরনো ক্ষোভ মেটানোর জন্য এই ঘটনাটিকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছেন। পোস্টার লাগানো একটি তুচ্ছ ঘটনা ছিল। সেখানে আলাপ আলোচনা করেই বিষয়টি মীমাংসা করা যেতে পারতো। 

কিন্তু যেহেতু ইউএনও এবং ওসির সঙ্গে সিটি মেয়রের সম্পর্ক ভালো না সেইজন্য সিটি মেয়রের লোকজনকে একহাত দেখে নেয়ার জন্য অতি উৎসাহী আনসাররা এবং পুলিশরা লঙ্কাকাণ্ড বাঁধিয়েছে বলেও কেউ কেউ মনে করেন। তবে এই ঘটনাটি যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে সারাদেশে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এবং সারাদেশে প্রশাসনের সঙ্গে আমলাদের একটি দূরত্ব তৈরি হতে পারে। এটি সরকারের জন্য কাম্য নয়। তাছাড়া এই ঘটনা দীর্ঘায়িত হলে রাজনীতিবিদদের জন্যও এটি একটি জটিল সমীকরণের বিষয় হয়ে দাঁড়াতে পারে। কারণ শেষ পর্যন্ত জনপ্রতিনিধিদের কাজ করতে হবে প্রশাসনকে সাথে নিয়েই। তাই সরকার এই ঘটনাটিকে আর বাড়তে না দিয়ে এখনই এটিকে সুরাহা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং সেই প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে কাজ চলছে। আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হবে এবং এই সংকট কেটে যাবে। আওয়ামী লীগের অন্য একজন নেতা বলেছেন, দুই পক্ষই যদি কথা বলা বন্ধ করে তাহলে পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্তিমিত হবে। তবে আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

পরীমনি কতটা ভয়ঙ্কর অপরাধী?

কোন মন্তব্য নেই


গ্রেপ্তারের ১৮ দিন অতিবাহিত হলো কিন্তু এখন পর্যন্ত জামিন হয়নি পরীমনির। শুরুতে বলা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে অন্তহীন অভিযোগের কথা। কিন্তু এখন এক মাদক মামলা নিয়েই তাকে তিনবার রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারপর সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পরীমনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। কি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সেটিও এখন পর্যন্ত খোলাসা করা হয়নি সিআইডির পক্ষ থেকে। তাহলে পরীমনির পরিণতি কী হবে? পরীমনিকে যেভাবে মাদকের মামলায় তিনবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো তাতে মনে হচ্ছে এই যে, পরীমনি একজন ভয়ঙ্কর অপরাধী। হতে পারে পরীমনি হয়তো বাংলাদেশের মাদক মাদক ব্যবসার মূল নেটওয়ার্কের অন্যতম মাফিয়া ডন, হতে পারে পরীমনি বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, হতে পারে পরীমনি এমন কিছু করছেন যা রাষ্ট্র এবং সরকারের জন্য ক্ষতিকর। আসলে কি বিষয়গুলো তাই নাকি পরীমনি স্রেফ প্রতিহিংসার শিকার বা পরীমনিকে গ্রেপ্তার করার পর এখন একটা কিছু দেখিয়ে এই গ্রেপ্তারটাকে জায়েজ করার চেষ্টা চলছে। এই প্রশ্নগুলো এখন বিভিন্ন মহল থেকে উঠছে।

পরীমনিকে নিয়ে দৃশ্যপটও এখন পাল্টে গেছে। প্রথম দিকে যখন পরীমনিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তখন জনমত ছিলো পরীমনির বিরুদ্ধে। সকলেই পরীমনির বাড়াবাড়ি নিয়ে মুখর ছিলো। বিশেষ করে বোট ক্লাবের ঘটনার পর যখন নাসির ইউ আহমেদ গ্রেপ্তার হন তার পরপরই অল কমিউনিটি ক্লাবে পরীমনির ভাংচুরের দৃশ্য, বোট ক্লাবে পরীমনির চিৎকার-চেঁচামেচি এবং পরীমনির বাসায় বারের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর পরীমনির বিরুদ্ধে একটা জনমত গঠিত হয়েছিল। এরপর ৪ আগস্ট যখন পরীমনিকে গ্রেপ্তার করা হয় তখন সাধারণ মানুষের মতামত ছিলো পরীমনির বিরুদ্ধে। অনেকেই এই গ্রেপ্তারকে স্বাগত জানিয়েছিল, অনেকে বলেছিল যে একজন শোবিজের তারকার এরকম উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন উচিত না। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই পরিস্থিতি পাল্টে যাচ্ছে। যারা একসময় পরীমনির সমালোচনায় মুখর ছিলেন তারাই এখন পরীমনির পক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন। বিশেষ করে গত কয়েকদিনে পরীমনির পক্ষে একদিকে যেমন নাগরিক সমাজ সোচ্চার হয়েছে অন্যদিকে শিল্পীরাও গতকাল মানববন্ধন করেছে। আমরা জানি যে, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এই সমস্ত মানববন্ধন প্রতিবাদ আসলে কোন সমাধান নয়। কিন্তু মৌলিক যে প্রশ্নটি বারবার সামনে চলে আসে তা হলো, পরীমনির অপরাধটা কি? কেন তাকে এভাবে শাস্তি পেতে হচ্ছে, বারবার তাকে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে।

আমরা এরকম বহু উদাহরণ দিতে পারি যেখানে মাদক মামলায় তাৎক্ষনিক ভাবে জামিন পাওয়া যায়। এটি একটি জামিনযোগ্য অপরাধ। আর তার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্যকোন মামলাও নাই। তাছাড়া পরীমনিকে নিয়ে যে ঘটনাটা ঘটানো হচ্ছে তা কখনোই সরকারের পক্ষে যাচ্ছে না। তাহলে কারা এটি করছে, কাদের ইঙ্গিতে এই বিষয়টিকে ইলাস্টিকের মতো টেনে টেনে লম্বা করা হচ্ছে। যারা করছে তারা কি সরকারের শুভাকাঙ্ক্ষী? পরীমনির ঘটনার মাধ্যমে একদিকে যেমন নারীর অবমাননা ঘটেছে, তেমনি একটি বার্তা খুব সুস্পষ্টভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, তা হলো যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা চাইলে সব কিছুই করতে পারে। আমরা মনে করি যে পরীমনি যদি অন্য কোন অপরাধ করে সেই অপরাধেরও বিচার করা যেতে পারে। কিন্তু পরীমনি যেহেতু একজন পরিচিত মুখ। তাকে এভাবে অযথা গ্রেপ্তার করা অর্থহীন। বরং তাকে জামিন দিয়ে তার বিরুদ্ধে যত অভিযোগ সবগুলো তদন্ত করা এবং নিরপেক্ষ বিচারে যদি পরীমনি দোষী হয় তাহলে তকে বিচারের আওতায় আনাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। কিন্তু এভাবে বারবার রিমান্ডে আনা আবার জেলে পাঠানোর যে নাটক সাজানো হচ্ছে তাতে পরীমনির ক্ষতি হবে সামান্যই, আইন-বিচার এবং সামগ্রিক ব্যবস্থার উপর মানুষের এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হতে পারে। সেটি সকলের জন্যই খারাপ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।

Don't Miss
©dnn24live all rights reserved
design by khyrul islam