আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে অনেকে তথাকথিত দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পরে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুদ্ধি অভিযান শুরু হয়। শুরতে অনেকেই বলেছিলেন যে এই অভিযান লোক দেখানোর জন্য কিন্তু একে একে ক্ষমতাসীন দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তারা ধরা পরার পর থেকে শুদ্ধি অভিযান নিয়ে মানুষের আগ্রহ বাড়তে থাকে। এ বছরের শুদ্ধি অভিযানের আলোচিত ঘটনাগুলো তুলে ধরা হলো।
‘ক্যাসিনো’ সম্রাট: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের তৎকালীন আলোচিত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার করা হয়। সম্রাট ধরা পড়ার পর তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর রাজধানীর রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে মামলা হয়।
রিজেন্টর সাহেদ: রিজেন্ট হাসপাতাল চেয়ারম্যান আলোচিত সাহেদ। করোনার পরীক্ষার নামে প্রতারণা করায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর তাকে অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ফরিদপুরে শুদ্ধি অভিযান: ২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারের অভিযোগে মানি লন্ডারিং মামলায় ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগে দুর্নীতি বিরোধী শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসাবে জেলা ছাত্রলীগের কমিটি বাতিল হবার পর এবার বাতিল করা হল জেলা যুবলীগের আহবায়ক কমিটি। শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি লেভিসহ আরও কয়েকজন নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
ডা. সাবরিনা শারমিন: করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথকেয়ারের প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
অস্ত্র মামলায় খালেদ: ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া মালিকানাধীন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবের ক্যাসিনোতে অভিযান চালানোর পর তাকে গুলশানের বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে খালেদকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
জিকে শামীম: ‘টেন্ডারবাজ’ খ্যাত জি কে শামীম। জি কে বিল্ডার্সের এই মালিককে গ্রেফতার করার সময় তার অফিস থেকে নগদ এক কোটি ৮০ লাখ টাকা ও ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআর উদ্ধার করা হয়।
অস্ত্র মামলায় সাবেক কমিশনার রাজীব: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তারেকুজ্জামান রাজীবকে অস্ত্র ও চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেফতার করা হয়।
কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি শফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযান: কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ও কৃষকলীগ নেতা শফিকুল আলম ফিরোজ। অভিযানের সময় শফিকুলের কাছে সাত প্যাকেট হলুদ রঙের ইয়াবা, বিদেশি পিস্তলসহ তিন রাউন্ড গুলি ও ক্যাসিনো সামগ্রী পাওয়া যায়। পরদিন সকালে র্যাব বাদী হয়ে অস্ত্র ও মাদক প্রতিরোধ আইনে ধানমন্ডি থানায় শফিকুলের বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করে।
অনলাইনের ক্যাসিনো সেলিম: বিদেশে পালিয়ে যাওয়ার সময় থাইল্যান্ডগামী এক প্লেন থেকে নামিয়ে ধরা হয় অনলাইন ক্যাসিনোর জনক সেলিম প্রধানকে। রাতভর অভিযানের পর পরদিন দুপুরে বনানীর আরেকটি অফিসে অভিযান চালানো হয়।