Responsive Ad Slot

Weather - Tutiempo.net

Latest

latest

সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি: যা বলছে বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ

মঙ্গলবার, জুন ০৭, ২০২২

/ by DNN24LIVE

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের তিনদিন পর একটি বিবৃতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে তারা ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি কিছু বিষয়ে অভিযোগও তোলা হয়েছে। দেওয়া হয়েছে রহস্যের ইঙ্গিতও। এই বিএম কনটেইনার ডিপোটি স্মার্ট গ্রুপের মালিকানাধীন। ডিপোটি তৈরি করা হয় পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি ও রপ্তানির কনটেইনার খালাস ও পরিবহনের জন্য।

মঙ্গলবার (৭ জুন) সন্ধ্যায় স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে দেয়া হয়েছে।

বিবৃতি  বলা হয়েছে, কোনো মালিক কি চায় তার প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হোক? কোটি কোটি টাকা খরচ করে, হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে তৈরি করা সে ধরনের প্রতিষ্ঠান রক্ষায় মালিকেরই সবচেয়ে বেশি আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকে। এখন একতরফাভাবে কেউ যদি এ ধরনের দুর্ঘটনার জন্য কেবল মালিককেই দোষারোপ করেন, নানা অজুহাত খুঁজে একটি কোম্পানিকে ধ্বংস করতে চান তবে সেটা দুঃখজনক এবং সমগ্র ব্যবসায়ী সমাজের জন্য বড় অশনি সংকেত।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এ দুর্ঘটনায় আমরা ব্যথিত ও মর্মাহত। সেই সাথে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আপনারা জানেন, কনটেইনার ডিপোর মূল কাজ হলো দৈনিক ভিত্তিতে কনটেইনারের জন্য জায়গা ভাড়া দেওয়া এবং তা আদায় করা। এখানে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের একটি অফিস আছে। তারা ডিপোতে আমদানি-রপ্তানি কাজে সার্বক্ষণিক তদারকি করেন। তাদের অনুমতি ব্যতীত কনটেইনার তো দূরের কথা এক কেজি পণ্যও ডিপোতে প্রবেশ কিংবা বের করা অসম্ভব। এমনকি যেকোনো কনটেইনার লক-আনলক করতেও তাদের অনুমতি প্রয়োজন হয়। ডিপোতে হাজার হাজার কনটেইনারের মধ্যে মাত্র একটি কনটেইনার বিস্ফোরণ হওয়া রহস্যজনক। ডিপো কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চায়।’

এই ডিপোর আগুন এত বিধ্বংসী হওয়ার জন্য হাইড্রোজেন পার-অক্সাইডকে দায়ী করা হচ্ছে। পোশাক ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্যসহ বিভিন্ন আমদানি ও রপ্তানির কনটেইনার খালাস ও পরিবহনের জন্য নির্মিত ডিপোতে রাসায়নিক মজুদ বা সংরক্ষণ করা হবে কেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। 

এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হাইড্রোজেন পার অক্সসাইড আমদানি-রপ্তানি পণ্য। দেশের ৬টি কোম্পানি এটি উৎপাদন করে। স্বাভাবিকভাবে অন্যান্য পণ্যের মতো এটিও ডিপোতে শুল্কায়ন শেষে বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আমাদের ডিপোর মাধ্যমেও পণ্যটি রপ্তানি হয়ে আসছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, দুর্ঘটনার সাথে সাথে পাশ্ববর্তী ফিলিং স্টেশনে রাতযাপন করে আগুন নির্বাপন এবং উদ্ধার কার্যক্রম তদারকি করেন স্বয়ং ডিপো মালিক। সেখান থেকে দ্রুত ২০টি অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে আহতদের ঘটনাস্থল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপর থেকে চিকিৎসকদের চাহিদা মতো সার্বক্ষণিক বিনামূল্যে নির্দিষ্ট চারটি দোকান থেকে ওষুধপত্রসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি কোম্পানির কন্ট্রোল রুমের মনিটরিং টিম তাদের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছে। আর রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের আর্থিক সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় থাকা-খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। 

বিবৃতিতে এমন দাবি করা হলেও রোববার সকালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে মালিকপক্ষের কাউকে পাচ্ছি না। মালিকদের কাউকে পেলে আমরা জানতে পারতাম কোন কনটেইনারে কী আছে। এটা আমাদের জানা নেই। এজন্য উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে। 

ডিপো কর্তৃপক্ষ বিবৃতিতে আরও বলছে ‘মানবিক দিক বিবেচনায় নিহত প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ১০ লাখ টাকা, অঙ্গহানির শিকার প্রত্যেককে ৬ লাখ টাকা এবং অপরাপর আহতদের ৪ লাখ টাকা করে সহায়তার ঘোষণা দেওয়া হয়। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের নিহত বীর সন্তানদের পরিবারকে নগদ ১৫ লাখ টাকা ও আহতদের ৭ লাখ টাকা করে প্রদানের ঘোষণা দিয়েছি। পাশাপাশি ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটনের জন্য বিএম কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ ৫ সদস্যের আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।’

বিএম ডিপো মালিকপক্ষ আরও বলছে, এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত পরিবারের শিশু থাকলে তারা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার পরিবারকে প্রতি মাসে বেতনের সমপরিমাণ টাকা প্রদান এবং উপার্জনক্ষম সদস্য থাকলে চাকরির ব্যবস্থা করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে।

সরকার কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটিগুলোকে পূর্ণ সহায়তা করার কথাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

Don't Miss
©dnn24live all rights reserved
design by khyrul islam